পথরেখা অনলাইন : মিচেল স্যান্টনারের অলরাউন্ড নৈপুন্যে চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। আজ টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ৯৯ রানে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়েছিলো নিউজিল্যান্ড। এই নিয়ে টানা দুই ম্যাচ হারলো নেদারল্যান্ডস। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৮১ রানে হেরেছিলো ডাচরা।
তিন ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২২ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৪৬ দশমিক ৩ ওভারে ২২৩ রানে অলআউট হয় নেদারল্যান্ডস। ব্যাটিংয়ে ১৭ বলে ৩৬ রান করার পর বোলিংয়ে ৫৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন স্যান্টনার। হায়দারাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় নেদারল্যান্ডস। ব্যাট হাতে দলকে ভালো শুরু এনে দেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও ইয়ং। অষ্টম ওভারে দলের রান ৫০ পার করেন তারা। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা কনওয়েকে ৩২ রানে থামিয়ে নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন নেদারল্যান্ডসের স্পিনার রোলফ ফন ডার মারু। উদ্বোধনী জুটিতে ৭৩ বলে ৬৭ রান পায় নিউজিল্যান্ড। এরপর ক্রিজে ইয়ংয়ের সঙ্গী হন আগের ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান রবীন্দ্র। কনওয়ের সাথে আরও একটি বড় জুটির চেষ্টা করেন ইয়ং। এই জুটিতেই ওয়ানডেতে ষষ্ঠ অর্ধশতকের দেখা পান ইয়ং। হাফ-সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করার পথেই ছিলেন তিনি। কিন্তু ২৭তম ওভারের প্রথম বলে ইয়ংকে শিকার করে নেদারল্যান্ডসকে ব্রেক থ্রু এনে দেন পেসার পল ফন মিকেরেন। ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮০ বলে ৭০ রান করে আউট হন ইয়ং। দ্বিতীয় উইকেটে রবীন্দ্রর সাথে ৮৪ বলে ৭৭ রান যোগ করেন ইয়ং। ইয়ং ফেরার পর বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন রবীন্দ্র। ৫০ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পরের ডেলিভারিতেই মারুর দ্বিতীয় শিকার হন ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫১ বলে ৫১ রান করা রবীন্দ্র। ৩৩তম ওভারে দলীয় ১৮৫ রানে রবীন্দ্র ফেরার পর ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন লাথাম। চতুর্থ উইকেটে লাথামের সাথে ৪৭ বলে ৫৩ রান তোলার পর ব্যক্তিগত ৪৮ রানে বিদায় নেন মিচেল। তার ৪৭ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ২টি ছক্কা ছিলো। ৪৯তম ওভারে আউট হবার আগে ওয়ানডেতে ২২তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন লাথাম। ৪৬ বল মোকাবেলা করে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৩ রান করেন লাথাম। শেষদিকে মিচেল স্যান্টনারের ১৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৩৭ রান এবং ম্যাট হেনরির ৪ বলে অপরাজিত ১০ রানে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২২ রান করে নিউজিল্যান্ড।ওয়ানডে ক্রিকেটে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান নিউজিল্যান্ডের। নেদারল্যান্ডসের পক্ষে মিকেরেন-মারু-আরিয়ান ২টি করে উইকেট নেন।
বড় রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৩ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরেন নেদারল্যান্ডসের দুই ওপেনার ম্যাক্স ও’দাউদ এবং বিক্রমজিত সিং। ও’দাউদ ১৬ ও বিক্রমজিত ১২ রান করেন। দুই ওপেনারের মত মিডল অর্ডার ব্যাটাররাও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হলেও ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিন নম্বরে নামা কলিন অ্যাকারম্যান। ৩৩তম ওভারে দলীয় ১৫৭ রানে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে নিউজিল্যান্ড স্পিনার স্যান্টারের বলে বিদায় নেন তিনি। ৫টি চারে ৭৩ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন অ্যাকারম্যান।
অ্যাকারম্যান ফেরার পর অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ৩০ ও সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট ২৯ রান করলে নেদারল্যান্ডসের হারের ব্যবধান কমে। স্যান্টনারের ঘুর্ণিতে ২১ বল বাকী থাকতে ২২৩ রানে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। ১০ ওভারে ৫৯ রানে ৫ উইকেট নেন স্যান্টনার। ৯৬ ম্যাচের ওয়ানডেতে দ্বিতীয়বারের মত ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেন স্যান্টনার। ১৩ অক্টোবর চেন্নাইয়ে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে নিউজিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড : ৩২২/৭, ৫০ ওভার (ইয়ং ৭০, লাথাম ৫৩, মারু ২/৫৬)
নেদারল্যান্ডস : ২২৩/১০, ৪৬.৩ ওভার (অ্যাকারম্যান ৬৯, এডওয়ার্ডস ৩০, স্যান্টনার ৫/৫৯)
ফল : নিউজিল্যান্ড ৯৯ রানে জয়ী।
পথরেখা/আসো