• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৭:১৬

ইংল্যান্ডকে লজ্জার হারে ডুবালো দক্ষিণ আফ্রিকা

পথরেখা অনলাইন : ব্যাটারদের পর বোলারদের অসাধারন নৈপুন্যে ওয়ানডে বিশ^কাপ ইতিহাসে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে লজ্জার হার উপহার দিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ২১ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকা ২২৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। নিজেদের বিশ্বকাপ এবং ওয়ানডে ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার ইংলিশদের। এর আগে ইংল্যান্ডের বড় হার ছিলো ২২১ রানের। ২০২২ সালে মেলবোর্নে দ্বিপাক্ষীক সিরিজে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২২১ রানে হেরেছিলো ইংলিশরা। 
 
এই ম্যাচে জয়ে ৪ ম্যাচে ৩ জয় ও ১ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়স্থানে থাকলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে নবমস্থানে নেমে গেল ইংলিশরা। ৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট আছে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস-শ্রীলংকা ও আফগানিস্তানেরও। পয়েন্ট সমান হলেও রান রেট বিবেচনায় বাংলাদেশ ষষ্ঠ, নেদারল্যান্ডস সপ্তম, শ্রীলংকা অষ্টম এবং সর্বশেষ দল হিসেবে দশমস্থানে আছে আফগানিস্তান। ৪ ম্যাচে সমান ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষ দু’টি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে- নিউজিল্যান্ড ও ভারত। 
 
হেনরিচ ক্লাসেনের সেঞ্চুরির সাথে তিন ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৯৯ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬৭ বলে ১০৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ক্লাসেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান প্রোটিয়াদের। জবাবে ২২ ওভারে ১৭০ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড।  মুম্বাইয়ে টস জিতে প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানায় ইংল্যান্ড। ইনিংসের প্রথম বলেই চার মারেন প্রোটিয়ার ওপেনার কুইন্টন ডি কক। পেসার রিচ টপলির পরের ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ডি কক। শুরুতে ডি কককে হারানোর চাপ দলকে বুঝতে দেননি আরেক ওপেনার হেনড্রিক্স ও তিন নম্বরে নামা ডুসেন। ১৭তম ওভারে হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান দু’জনে। ৪৯ বলে ডুসেন ওয়ানডেতে ১৩তম এবং ৪৮ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ অর্ধশতক করেন হেনড্রিক্স। ২০তম ওভারে ৮ চারে ৬১ বলে ৬০ রান করা ডুসেনকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার আদিল রশিদ। ১১৬ বলে দলের স্কোরে ১২১ রান যোগ করেন ডুসেন ও হেনড্রিক্স। তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক আইডেন মার্করামের সাথে জুটি গড়ার চেষ্টা করে বেশি দূর যেতে পারেননি হেনড্রিক্স। তাদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান রশিদ। ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৫ বলে ৮৫ রান করা হেনড্রিক্সকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান রশিদ। হেনড্রিক্সের সাথে না পারলেও চতুর্থ উইকেটে ক্লাসেনের সাথে হাফ-সেঞ্চুরির জুটি গড়েন মার্করাম। তাদের জুটিতে দলের রান ২শ পার হয়। ৩৫তম ওভারে মার্করামকে ৪২ রানে থামিয়ে ইংল্যান্ডকে আনন্দে মাতান টপলি। ছয় নম্বরে নামা ডেভিড মিলারকে দুই অংকের কোটা পার করতে দেননি টপলি। ৫ রানে বিদায় নেন তিনি। ৩৭তম ওভারে ২৪৩ রানে মিলার ফেরার পর দলের বড় স্কোরের পথ তৈরি করেন ক্লাসেন ও মর্কো জানসেন। ইংল্যান্ডের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলে ৪৭তম ওভারে ওয়ানডেতে চতুর্থ সেঞ্চুরির দেখা পান ৬১ বল খেলা ক্লাসেন। বিশ^কাপে দ্রুততম সেঞ্চুরিতে এটি ষষ্ঠস্থানে। এবারের আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের এটি পঞ্চম সেঞ্চুরি। এর আগে ২০১৫ সালেও এক আসরে সর্বোচ্চ পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলো প্রোটিয়া ব্যাটাররা। 
 
ক্লাসেনের সেঞ্চুরির পর শেষদিকে মারমুখী রুপ নেন জানসেন। ইনিংসের শেষ ৩ ওভারে ১০ বল খেলে ৪০ রান তুলেন জানসেন। ৩৫ বলে ওয়ানডেতে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন জানসেন। শেষ ওভারের প্রথম বলে পেসার গাস অ্যাটকিনসনের বলে আউট হন ক্লাসেন। ১২ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৭ বলে ১০৯ রান করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্রথম বিশ^কাপ খেলতে নেমে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসে এটি তৃতীয়স্থানে জায়গা পেয়েছে। ষষ্ঠ উইকেটে জানসেন-ক্লাসেন ৭৭ বলে ১৫১ রান যোগ করেন। ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ষষ্ঠ বা তার নীচের দিকের উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৯৯ রানের পাহাড় সমান রান এনে দেন জানসেন। শেষ ১০ ওভারে ১৪৩ রান পায় প্রোটিয়ারা। এরমধ্যে শেষ ৫ ওভারে ৮৪ রান ছিলো। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানেডেতে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান দক্ষিণ আফ্রিকার। এই নিয়ে প্রথমে ব্যাটিং করে টানা ষষ্ঠবার ৩শর বেশি রান করলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৪২ বলে অপরাজিত ৭৫ রান করেন জানসেন। টপলি ৮.৫ ওভারে ৮৮ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া অ্যাটকিনসন-রশিদ নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। 
 
৪০০ রানের পাহাড় সমান টার্গেটে খেলতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার চার পেসারের তোপের মুখে পড়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা। ১০০ রানে ৮ উইকেট হারায় তারা। জনি বেয়ারস্টো ১০, ডেভিড মালান ৬, জো রুট ২, বেন স্টোকস ৫, হ্যারি ব্রুক ১৭, অধিনায়ক জশ বাটলার ১৫, ডেভিড উইলি ১২ ও আদিল রশিদ ১০ রানে ফিরেন। এ অবস্থায় বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে লজ্জাজনক হারের মুখে পড়ে ইংল্যান্ড। কিন্তু নবম উইকেটে ব্যাট হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের উপর তান্ডব চালান লোয়ার অর্ডারের দুই ব্যাটার অ্যাটকিনসন ও উড। চার-ছক্কার বন্যায় ৩২ বল খেলে ৭০ রান তুলে ইংল্যান্ডকে লজ্জার হারের মুখ থেকে রক্ষা করেন তারা। ২২তম ওভারে স্পিনার কেশব মহারাজ ইংল্যান্ডের নবম উইকেট হিসেবে অ্যাটকিনসনকে তুলে নিলে ১৭০ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ইনজুরির কারনে ব্যাটিং করেননি টপলি। অ্যাটকিনসন ৭টি চারে ২১ বলে ৩১ রানে আউট হলেও, ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১৭ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন উড। দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়েৎজি ৩৫ রানে ৩টি, লুঙ্গি এনগিডি-জানসেন ২টি করে এবং কাগিসো রাবাদা-মহারাজ ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন ক্লাসেন। 
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা : ৩৯৯/৭, ৫০ ওভার (ক্লাসেন ১০৯, হেনড্রিক্স ৮৫, জানসেন ৭৫*, টপলি ৩/৮৮)।
ইংল্যান্ড : ১৭০/১০, ২২ ওভার (উড ৪৩*, অ্যাটকিনসন ৩৫, কোয়েৎজি ৩/৩৫)।
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ২২৯ রানে জয়ী। 
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।