• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১০ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২২:১৬

ব্যর্থতার ঘেরাটোপে বন্দি বাংলাদেশের ক্রিকেট

পথরেখা অনলাইন : বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন নেই। বিদায় বাংলাদেশ। এই বিদায় একরাশ গ্লানি আর হতাশার। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর টানা ৬ ম্যাচে হেরেছে দল। খাদের কিনারে পৌঁছে যাওয়া বাংলাদেশ দল এখন ব্যর্থতার ঘেরাটোপে বন্দি। জানা নেই উত্তোরণের কোন পথ। তবে শেষ ম্যাচগুলো থেকে একটা দুইটা জয় নিতে পারলে হয়তো শেষটা ভাল করতে পারবে দল।
 
সবশেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানের হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে সাকিব বাহিনী। অথচ টুর্নামেন্টের শুরুটা জয় দিয়ে করেছিল বাংলাদেশ। পরে টানা ৫ হারে সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা আগেই শেষ হয়েছিল। পাকিদের বিপক্ষে ম্যাচসহ বাকি ২ তাই নিয়মরক্ষার। তবে এই নিয়মরক্ষার ম্যাচেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার ভাগ্য নির্ভর করছে বাংলাদেশের।
 
বিশেষ করে আগামী চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে হলে পয়েন্ট তালিকায় ৮ এর মধ্যে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ব্যাটিং ইনিংসেই যেন হার নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। পাকিস্তানের বিপক্ষে যে টেনেটুনে মাত্র ২০৪ রান করতে পেরেছে। আধুনিক সংস্করণের ওয়ানডেতে এই লক্ষ্যে খুবই ছোট। বাবার আযমের দলকে আটকাতে হলে তাই শুরুতেই প্রতিপক্ষের ব্যাটিং অর্ডার ধসিয়ে দিতে হতো। কিন্তু বাংলাদেশের বোলাররা ধসিয়ে দেওয়ার বিপরীতে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটির কাছে বেধড়ক মার খেয়েছে। এ ম্যাচ দিয়ে আবারও একাদশে সুযোগ পাওয়া ফখর জামান শুরুটা করেন। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন বাঁহাতি ব্যাটার। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দিতে থাকেন আবদুল্লাহ শফিকও। উদ্বোধনী জুটিতেই ১২৮ রান যোগ করেন শফিক-ফখর। সেটিও আবার ২২ ওভার শেষ হওয়ার আগেই। ফিফটি তুলে নিয়েছেন দুজনই। তবে ফিফটির পর দুজনের কেউই ইনিংসকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে পারেননি।
 
এর আগে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের পঞ্চম বলেই তানজিদ হাসান তামিমকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলান শাহিন শাহ আফ্রিদি। ৫ বলে কোনো রান না করেই ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটার। সতীর্থকে অনুসরণ করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন তিনে ব্যাটিংয়ে নামা নাজমুল হাসান শান্তও। ৪ রানে বাংলাদেশের সহ অধিনায়কও ফেরেন শাহিনের বলেই। হাল ধরার বিপরীতে উল্টো আউট হয়ে দলকে আরও বিপদে ফেলেন মুশফিকুর রহিম। মুশফিক ৫ রানে আউট হওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ২৩ রানে ৩ উইকেট। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চতুর্থ উইকেটে ৭৯ রানের জুটি গড়েন দুজনে। কিন্তু ৪৫ রানে লিটন আউটের পর আবারও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।  ৫ রানের জন্য লিটন ফিফটি না পেলেও পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ফিফটি করার পর ইনিংসকে বড় করতে পারেনি তিনিও। ৫৬ রান করে সতীর্থর দেখানো পথেই ফেরেন অভিজ্ঞ ব্যাটার। এ ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের একাদশে আবারও সুযোগ পাওয়া তাওহীদ হৃদয়ও বেশিক্ষণ টেকেননি। ৭ রানে আউট হন তিনি।
 
এরপর যা হয়েছে সেটা তো সবাই দেখেছে। এদিকে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারে, বিশ্বাস কাপ্তান সাকিবের। ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’, এই প্রবাদবাক্য থেকেই এখন আশা খুঁজে নিতে হচ্ছে বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক। প্রথম দল হিসেবে ২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। তবু জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করার কথা জানিয়েছেন সাকিব। ধর্মশালায় আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল বাংলাদেশ। এরপর থেকে হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে সাকিবের দল। ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছে ১৩৭ রানে, ৮ উইকেটে, ৭ উইকেটে ও ১৪৯ রানে। যেখানে নিউজিল্যান্ড ও ভারত ম্যাচ জিতেছে ৪৩ ও ৫১ বল হাতে রেখে। এরপর কলকাতায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও ২৩০ রান তাড়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ হেরেছে ৮৭ রানে। পরাজয়ের বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকা বাংলাদেশের বিপক্ষে গতকাল ১০৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে পাকিস্তান। টুর্নামেন্ট জুড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিং একসঙ্গে জ্বলে উঠছে না।
 
নেদারল্যান্ডস ম্যাচে বোলিং ভালো হলেও ৭০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। আর ভারতের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটি ১০০-এর কাছাকাছি রান করলেও পরের দিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্কোরবোর্ডে ১০০ রান তোলার আগেই সাকিবের দল হারিয়েছে ৪ বা তার বেশি উইকেট। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৩ রানে প্রথম ৩ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরে বিশ্বকাপ থেকে তো বাংলাদেশের বিদায় নিশ্চিত হয়েছেই। একই সঙ্গে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিয়ে রয়েছে অনেক ‘যদি-কিন্তু’। পাকিস্তানসহ পয়েন্ট তালিকার সেরা আট দল খেলবে আগামী চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এখন বিশ্বকাপে বাকি থাকা শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচ বাংলাদেশের জেতার পাশাপাশি নির্ভর করতে হবে অন্যান্য ম্যাচের ওপর, যেখানে বাংলাদেশ রয়েছে পয়েন্ট তালিকার ৯ নম্বরে। সাকিব যেন কিঞ্চিৎ আশার কথা শুনিয়েছেন। 
পথরেখা/আসো
 

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।