• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৭:০২

বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়ে জয় ভারতের

ভারত : ৩৫৭/৮, ৫০ ওভার
শ্রীলঙ্কা : ৫৫/১০, ১৯.৪ ওভার
ফল : ভারত ৩০২ জয়ী

পথরেখা অনলাইন : বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়ে জয়! শামির ৫ উইকেট, ৩০২ রানে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সাতে সাত রোহিতদের সব মিলিয়ে এক অনন্য অসাধারণ ম্যাচ। ভারতের ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারল না শ্রীলঙ্কা। পয়েন্ট তালিকায় আবার শীর্ষে চলে এল ভারত।

 
বিশ্বকাপের ম্যাচ! খাতায়-কলমে তেমনই। খেলা দেখে অন্তত বিশ্বকাপের আঁচ পাওয়া গেল না। সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করার পথে ভারতের ব্যাটার, বোলারেরা আয়েশ করে অনুশীলন সেরে নিলেন। ২ নভেম্বর বিশ্বকাপে নতুন রেকর্ড গড়ল ভারতীয় দল। রানের ব্যবধানে এটাই বিশ্বকাপে ভারতের সব থেকে বড় জয়। এর আগে বিশ্বকাপে ভারতের সব থেকে বড় ব্যবধানে জয় ছিল বারমুডার বিরুদ্ধে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ২৫৭ রানে জিতেছিল অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়ের ভারত।
 
ওয়াংখেড়ের ২২ গজে খেলা শুরু হওয়ার আগে বিরাট কোহলির নাচ দেখা গিয়েছিল। তিনি বিরাট জয়ের আগাম পূর্বাভাস পেয়ে গিয়েছিলেন? ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে এই মাঠে এই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারত। ভুল বলা হল এই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সেই দলের মিল নেই। মুথাইয়া মুরলিথরন, কুমার সাঙ্গাকারা, লসিথ মালিঙ্গা, তিলকরত্নে দিলশান, অজন্তা মেন্ডিসরা ছিলেন সেই দলে। সেই দলে ছিলেন মাহেলা জয়বর্ধনে এবং অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। এবারও তাঁরা রয়েছেন। জয়বর্ধনে রয়েছেন দলের ব্যাটিং পরামর্শদাতা হিসাবে। চোট জর্জরিত শ্রীলঙ্কা শিবির প্রতিযোগিতার মাঝ পথে উড়িয়ে এনেছে ‘বুড়ো’ ম্যাথিউজকে। তা দিয়ে ফর্মে থাকা ভারতীয় দলকে আটকানো সম্ভব ছিল না। শ্রীলঙ্কা পারলও না।
 
টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মেন্ডিস। ঘরের মাঠে রান পেলেন না রোহিত শর্মা (৪)। অধিনায়ক ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই আউট হওয়ায় ওয়াংখেড়ের গ্যালারিতে গুমোট নেমে এসেছিল। তা দ্রুত কাটিয়ে দিলেন বিরাট কোহলি, শুভমন গিলেরা। শ্রীলঙ্কার ফিল্ডারদের কার্যত দাঁড় করিয়ে রেখে তাঁদের শট ছুটল বাউন্ডারির দিকে। দর্শক হয়ে দেখতে হল প্রতিপক্ষের বোলারদের। ২২ গজের কোথায় বল ফেললে কোহলি, শুভমনের আগ্রাসনে রাশ টানা যাবে, তা ঠাওর করতেই পারলেন না তাঁরা। দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে কোহলি-শুভমন তুললেন ১৮৯ রান। কোহলি করলেন ৮৮ রান। ৯৪ বলের ইনিংসে মারলেন ১১টি ছয়। উইকেটের অন্য প্রান্তে শুভমনের ব্যাট থেকে এল ৯২ বলে ৯২ রানের ইনিংস। ১১টি চার এবং ২টি ছয় দিয়ে সাজালেন নিজের ইনিংসটি। দু’জনকেই শতরান পেতে দিলেন না শ্রীলঙ্কার জোরে বোলার দিলশান মদুশঙ্ক। তিনিই আউট করেছিলেন রোহিতকেও। এক দিনের ক্রিকেটে ৪৯তম শতরান পেলেন না কোহলি। প্রিয় ওয়াংখেড়ের ভিআইপি বক্সে বসে থাকা সচিন তেন্ডুলকর কি কিছুটা স্বস্তি পেলেন? এক দিনের ক্রিকেটে তাঁর সব থেকে বেশি শতরানের রেকর্ড আরও কিছু দিন টিকে থাকার জন্য? সচিন কী ভাবলেন জানা যায়নি। তবে শুভমন শতরান হাতছাড়া করায় হতাশ হয়েছেন সচিন-কন্যা সারা। টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে তাঁর হতাশার ছবি। কোহলি-শুভমনের জোড়া দাপুটে ইনিংসে সচিন স্বস্তি পেলেও সারা হয়তো পেলেন না।
 
স্বস্তি অবশ্য পেল ভারতীয় শিবির। সেই স্বস্তির নাম শ্রেয়স আয়ার। ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে এক মাত্র তিনিই রান পাচ্ছিলেন না। ঘরের চেনা মাঠে চেনা মেজাজে দেখা গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ককে। ওয়াংখেড়ের ২২ গজে শ্রেয়সের সামনেও ভোঁতা হয়ে গেল শ্রীলঙ্কা বোলিং আক্রমণ। ৩টি চার এবং ৬টি ছক্কার সাহায্যে তাঁর ৫৬ বলে ৮১ রানের ইনিংস ভারতের রানকে নিয়ে চলে গেল শ্রীলঙ্কার ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাঁকেও আউট করলেন মদুশঙ্ক। রোহিতের মতোই ঘরের মাঠে রান পেলেন না সূর্যকুমার যাদবও (১২)। তাঁকেও আউট করলেন মদুশঙ্ক। ভারতীয় ব্যাটারদের দাপটের মধ্যেও ৫ উইকেট শ্রীলঙ্কার জোরে বোলারের। যদিও খরচ করতে হল ৮০ রান। তাতেই নির্বিষ হয়ে গেল তাঁর ৫ উইকেটের কৃতিত্ব। ভারতীয় ইনিংসের শেষ দিকে কেকের উপর চেরি বিছিয়ে দিল রবীন্দ্র জাডেজার ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস। ৮ উইকেটে ৩৫৭ রান তুলে শ্রীলঙ্কাকে দান ছাড়ল রোহিতের ‘নির্দয়’ ভারত।
 
ব্যাটারেরা তবু উইকেট উপহার দিয়েছেন শ্রীলঙ্কাকে। ভারতের বোলারেরা আরও নির্মম আচরণ করলেন। না হলে ১৪ রানে ৬ উইকেট! ২০ ওভারের মশলা ম্যাচেও এমন স্কোর বোর্ড দেখা যায় না। যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, মহম্মদ শামি— তিন জনে যেন ইচ্ছামতো আউট করলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের। পাথুম নিশঙ্ক (শূন্য), দিমুথ করুণারত্নে (শূন্য), মেন্ডিস (১), সাদিরা সমরবিক্রম (শূন্য), চরিথ আশালঙ্ক (১), দাসুন হেমন্ত (শূন্য), দুষ্মন্ত চামিরারা (শূন্য) নিয়মরক্ষা করতে ব্যাট হাতে ২২ গজে এলেন। এ টুকুই অবদান তাঁদের। ভারতের সেমিফাইনালের রাস্তা মসৃণ করতেই যেন তাঁদের রণসজ্জা (প্যাড, গ্লাভস, হেলমেট)।
 
শ্রীলঙ্কার ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট তুললেন বুমরা। দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই উইকেট তুললেন সিরাজও। আবার নবম ওভারে বল করতে এসে প্রথম ওভারেই দু’টি উইকেট তুলে নিলেন শামি। ভারতের জোরে বোলারেরা ওয়াংখেড়ের লালচে উইকেটে এমন একটা আবহ তৈরি করে দিলেন, যে বলের কাছে ব্যাট নিয়ে যেতেই ভরসা পাচ্ছিলেন না শ্রীলঙ্কার ব্যাটারেরা। শামিদের বোলিং দেখে মনে হচ্ছিল বার্মিংহ্যাম বা পার্থে খেলা হচ্ছে।
 
৩৫৭ রানের জবাবে ২২ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়া পর শ্রীলঙ্কার জয়ের আর কোনও আশা ছিল না। তারও আগে ৩ রানে শ্রীলঙ্কার ৪ উইকেট পড়ার পরেই বোঝা গিয়েছিল এবারের বিশ্বকাপের সব থেকে একপেশে ম্যাচ উপহার দিতে চলেছেন রোহিতেরা। ম্যাচের বাকিটা ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। যে পর্বে ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের ক্রিকেটীয় বিনোদনে ভরিয়ে রাখলেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। শেষ পর্যন্ত ১৯.৪ ওভারে ৫৫ রানে শেষ হল শ্রীলঙ্কার ইনিংস।
 
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সফলতম সেই বাংলার শামি। বিশ্বকাপের ম্যাচে আবার ৫ উইকেট নিলেন তিনি। ৫ ওভার বল করে ১৮ রানে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। এক দিনের ক্রিকেটে এটাই তাঁর সেরা পারফরম্যান্স। বিশ্বকাপে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিও হলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে তাঁর উইকেট সংখ্যা হল ৪৫। সিরাজ ৩ উইকেট নিলেন ১৬ রান দিয়ে। ৮ রানে ১ উইকেট বুমরার। ৪ রানে ১ উইকেট জাডেজার।
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।