পথরেখা অনলাইন : বিশ্বকাপের একটি সেমিফাইনাল আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। শনিবার নিশ্চিত হয়ে গেল আরও একটি সেমিফাইনাল। কোন দেশ কার বিরুদ্ধে খেলবে তা ঠিক হয়ে গেল। রাউন্ড রবিন পর্যায়ে এখনও ভারতের শেষ ম্যাচ বাকি। তার আগেই সেমিফাইনালে কাদের মুখোমুখি হবে তারা তা ঠিক হয়ে গেল। আগামী ১৫ নভেম্বর, অর্থাৎ বুধবার প্রথম সেমিফাইনালে ভারত খেলবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই ম্যাচ হবে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অস্ট্রেলিয়া খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
গতবারের বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে এবারও। গতবার ভারত রাউন্ড রবিনে শীর্ষস্থানে ছিল। চতুর্থ স্থানে ছিল নিউ জ়িল্যান্ড। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। পাকিস্তানকে ছিটকে দিয়ে নিউ জ়িল্যান্ড শেষ চারের টিকিট জিতে নিল। গত বার রাউন্ড রবিনে ভারত অপ্রতিরোধ্য থেকেও সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিল নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে। এ বার ভারত রাউন্ড রবিন পর্বেই নিউ জ়িল্যান্ডকে হারিয়েছে। মিটিয়েছে ২০ বছরের খরা। তবে দল হিসাবে নিউ জ়িল্যান্ড যে কোনও দিন বেগ দিতে পারে। তাই রোহিত শর্মার দলকে সতর্ক থাকতে হবে।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে যে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে, তারা খেলেছিল ২৪ বছর আগেও। ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপের সেই সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাট করে ২১৩ রান তুলেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা রান তাড়া করে একই রান তোলে। কিন্তু জয়ের রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান অ্যালান ডোনাল্ড। রান রেটে ফাইনালে উঠে যায় অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রকৃত অর্থে ‘চোকার্স’ তকমা পাওয়া শুরু করেছিল ওই ম্যাচের পর থেকেই।
বিশ্বকাপে রাউন্ড রবিন পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া। রেকর্ড রান তাড়া করে জিতল তারা। মিচেল মার্শের মারকুটে ব্যাটিংয়ের কোনও জবাব খুঁজে পেল না বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে ৩০৬ রান তুলেছিল তারা। কিন্তু পুণের পিচে অস্ট্রেলিয়ার খেলতে কোনও সমস্যাই হল না। একার হাতে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিলেন মার্শ। আগের ম্যাচে যদি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নাটক হন, তা হলে এই ম্যাচে নিঃসন্দেহে তারকার নাম মার্শ।
অস্ট্রেলিয়া টসে জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বাংলাদেশের কোনও ব্যাটার খুব বড় রানের ইনিংস খেলতে না পারলেও প্রায় প্রত্যেকে অবদান রেখেছেন। প্রথম উইকেটে উঠে যায় ৭৬ রান। তানজিদ হাসান এবং লিটন দাস দু’জনেই ৩৬ রান করেন। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অল্পের জন্যে অর্ধশতরান পাননি (৪৫)। তবে তৃতীয় উইকেটে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ৬৪ রানে জুটি গড়েন। তৌহিদ (৭৪) একাই অর্ধশতরান করেছেন।
রান তাড়া করতে নেমে তাসকিন আহমেদের বলে শুরুতে ট্রেভিস হেড ফিরে গেলেও অস্ট্রেলিয়াকে এর পর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ডেভিড ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ দু’জনেই আগ্রাসী খেলা শুরু করেন। মাহেদি হাসানকে টানা তিনটি চার মেরে শুরু করেন মার্শ। ওয়ার্নারও অন্য প্রান্তে চালিয়ে খেলতে থাকেন।
৫৩ রান করে ওয়ার্নার ফেরার পর কিছুটা রানের গতি কমে গিয়েছিল। কিন্তু উল্টো দিকে স্টিভ স্মিথ কোনও বিপদ ঘটতে দেননি। মার্শের রানের গতি কমেনি কখনওই। শুরুটা যে ভাবে করেছিলেন শেষটাও সে ভাবেই করেছেন। ম্যাচের মাঝে একটা সময়ে নাটক হয়। ৩৯তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে স্টিভ স্মিথের একটি শট উল্টো দিকের উইকেট ভেঙে দেয়। তত ক্ষণে নন-স্ট্রাইকার মার্শ ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। মুস্তাফিজুর দাবি করেন, বলটি তাঁর পায়ে লেগেছে। তাই মার্শ রান আউট হয়েছেন। মার্শও তর্ক না করে সাজঘরে দিকে ফেরা শুরু করেন।
ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল? রোহিতদের দলের কাকে সব থেকে ভয়, জানালেন রেকর্ড করা ম্যাক্সওয়েল
কিন্তু বাধা দেন স্মিথ। তিনি আম্পায়ারের উদ্দেশে বলতে থাকেন, কোনও ভাবেই বল মুস্তাফিজুরের পায়ে লাগেনি। আম্পায়ারেরা মার্শকে ফিরে যেতে বারণ করেন এবং তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেন। দেখা যায়, বল সত্যিই মুস্তাফিজুরের পায়ে লাগেনি। তার পরে আর মার্শও থামেননি। সেই ওভারেই শেষ দু’টি বলে মুস্তাফিজুরকে পর পর দু’টি চার মেরে নিজের ১৫০ পূরণ করেন।
পথরেখা/আসো