• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৭:১৩

দক্ষিণ আফ্রিকার চোকার্স অপবাদ ঘুচল না

দক্ষিণ আফ্রিকা : ২১২, ৪৯.৪ ওভারে
অস্ট্রেলিয়া : ২১৫/৭, ৪৭.২ ওভারে
ফল : অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী
পথরেখা অনলাইন : বড় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘চোকার্স’। ১৬ নভেম্বর ইডেনে কথাটা আরও এক বার সত্যি হল। ‘চোকার্স’ তকমা মুছে ফেলতে পারল না টেম্বা বাভুমার দল। বিশ্বকাপের শুরু থেকে দারুণ ফর্মে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে চেনা গেল না সেমিফাইনালের অর্ধেক সময়। ৩ উইকেটে জিতে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের সামনে অস্ট্রেলিয়া। তবে যতটা সহজে অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনাল জিতবে বলে মনে করা হচ্ছিল ম্যাচের প্রথমার্ধে, ততটা সহজ হল না পাঁচ বারের বিশ্বজয়ীদের জয়। ইডেন গার্ডেন্সের মন্থর হয়ে যাওয়া উইকেটে যথেষ্ট খেটে জিততে হল তাদের। পাঁচ বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে পাঁচ বারই হারল দক্ষিণ আফ্রিকা।
 
আকাশে মেঘ থাকলেও টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেন বাভুমা। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের ফসল ঘরে তুলতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। ২১২ রানেই শেষ হয়ে গেল তাদের ইনিংস। ডেভিড মিলার ১০১ রানের লড়াকু ইনিংস না খেলতে পারলে এবং হেনরিক ক্লাসেন ৪৭ রান না করলে বড় লজ্জায় পড়তে হত দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দলের ইনিংসের ধস শুরু বাভুমাকে (শূন্য) দিয়েই। অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছেন কুইন্টন ডি’কক। গোটা প্রতিযোগিতায় দারুণ ফর্মে ছিলেন তিনি। সেমিফাইনালে ডি’ককও (৪) পারলেন না। ব্যর্থ তিন নম্বরে নামা ভ্যান ডার ডুসেনও (৬)। ভরসা দিতে পারলেন না এডেন মার্করামও (১০)। জস হ্যাজলউডদের দাপটে ১১.৫ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের এই রান বিশ্বকাপের ইতিহাসে এত খারাপ ভাবে কখনও ইনিংস শুরু করেনি তারা। ১০ ওভারে রান ছিল ১৮/২। যা শেষ চারটি বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে যুগ্ম দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ও ১০ ওভারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল। আর ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথম ১০ ওভারে পাকিস্তান ১৪ রানে ২ উইকেট হারিয়েছিল জ়িম্বাবোয়ের পর।
 
২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের হাল ধরেন হেনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে তাঁরা দু’জনে তোলেন ৯৫ রান। সামান্য বৃষ্টির পর আকাশ পরিষ্কার হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে। এই জুটিতেই অক্সিজেন পায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ৪৮ বলে ৪৭ রান করলেন ক্লাসেন। মারলেন ৪টি চার এবং ২টি ছয়। তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং-ই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তবে দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেয় মিলারের দায়িত্বশীল শতরানের ইনিংস। ১১৬ বলে ১০১ রান করলেন ৮টি চার এবং ৫টি ছয়ের মাধ্যমে। তাঁর ব্যাটে ভর করেই ২০০ রানের গণ্ডি পার করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাঁদের পরের কোনও ব্যাটারও বলার মতো রান পেলেন না। তাই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসও বেশি দূর এগোল না। অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার মিচেল স্টার্ক ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিলেন। তবে কৃপণতম ছিলেন হ্যাজলউড। তিনি ১২ রানে ২ উইকেট নিলেন। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ৩ উইকেট নিলেন ৫১ রান খরচ করে। ২১ রানে ২ উইকেট নিলেন ট্র্যাভিড হেডও।
 
এক দিনের ক্রিকেটে ২১৩ রানের লক্ষ্য তেমন বড় নয়। ছোটই বলা চলে। তবু ইডেনের ২২ গজে সেই রান খুব সহজে তুলতে পারল না অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার অবশ্য ইনিংস শুরু করেন আগ্রাসী মেজাজে। ৪৮ বলে ৯টি চার এবং ২টি ছয়ের সাহায্যে ৬২ রান করলেন হেড। ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে এল ১৮ বলে ২৯ রানের ইনিংস। ১টি চার এবং ৪টি ছয় মারলেন তিনি। মার্করাম এবং কেশব মহারাজ দুই ওপেনারকে পর দু’ওভারে আউট করতেই চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই চাপ সঙ্গী হল পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের গোটা ইনিংসে। তিন নম্বরে নেমে ব্যর্থ হলেন মিচেল মার্শ (শূন্য)। দলকে তেমন ভরসা দিতে পারলেন না স্টিভ স্মিথ (৬২ বলে ৩০), মার্নাস লাবুশেন (৩১ বলে ১৮), গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা (১)। শেষ দিকে লড়াই করলেন জশ ইংলিস। তাঁকে সঙ্গ দিলেন স্টার্ক। জেরাল্ড কোয়েৎজের বলে আউট হওয়ার আগে ইংলিস করলেন ৪৯ বলে ২৮ রান। তিনি আউট হওয়ায় ১৯৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় অসিরা। ইংলিস আউট হওয়ার পর স্টার্কের সঙ্গে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে গেলেন অধিনায়ক কামিন্স। কয়েক বার বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হলেও ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। স্টার্ক এবং কামিন্স অস্ট্রেলিয়াকে অষ্টম বারের জন্য বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে দিলেন। শেষ পর্যন্ত স্টার্ক অপরাজিত থাকলেন ৩৮ বলে ১৬ রান করে। কামিন্সের ব্যাট থেকে এল ২৯ বলে অপরাজিত ১৪ রানের ইনিংস।
 
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারেরা ইডেনের মন্থর উইকেটের সুবিধা যথাসাধ্য কাজে লাগিয়েও দলকে জেতাতে পারলেন না। অসি ব্যাটারদের বার বার সমস্যায় ফেলেও লাভ হল না। সেমিফাইনালে প্রত্যাশিত মানের হল না দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডিংয়ও। বেশ কয়েকটি ক্যাচ ফেললেন বাভুমারা। তার মধ্যে একাই দুই ফেললেন উইকেটরক্ষক ডি’কক। দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম বোলার তাবারেজ শামসি ৪২ রানে ২ উইকেট নিলেন। ৪৭ রানে ২ উইকেট কোয়েৎজের। ১টি করে উইকেট নিলেন কেশব মহারাজ, কাগিসো রাবাডা এবং মার্করাম।
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।