• বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
    ১৭ মাঘ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৩:৪৫

দিনাজপুরে প্রথম বারের মত চাষ হচ্ছে টিউলিপ ফুল ফোটার অপেক্ষায় এলাকাবাসী

  • কৃষি বার্তা       
  • ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫       
  •       
  • ৩০-০১-২০২৫, ২১:৩১:০৭

পথরেখা অনলাইন : দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে প্রথমবারের মতো শীত প্রধান দেশের টিউলিপ ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা হাসিনুর রহমান চৌধুরী (৩৫)। তার বাগানে এখন ফুটেছে হলুদ রঙের টিউলিপ ফুল।

জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা হাসিনুর রহমান চৌধুরী আলাপকালে বলেন, এবছর প্রথমবারের মতো টিউলিপ ফুলের বাগান করেছি। দিনাজপুরেও এটাই প্রথম টিউলিপ বাগান। তাই ফুল ফোটার খবর পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে এই বাগানে। জেলায় ফুলের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে নিবিড় পরিচর্যার জন্য এখন পর্যন্ত কাউকে টিউলিপ বাগানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছেনা।

উল্লেখ্য, দিনাজপুরের বিরলে কয়েকজন চাষি আছেন যারা গাঁদা ও গোলাপ ফুল চাষ করেন। এর পাশাপাশি নশিপুর এলাকায় চাষ হয় রজনীগন্ধা ফুলের। কিন্তু এর আগে কোথাও টিউলিপ চাষ হয় নি।

চলতি বছর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার হাসিনুর রহমান চৌধুরী বন্ধুগাঁও এলাকায় তার দুই শতাংশ জমিতে ৫ রঙের টিউলিপ ফুলের চারা রোপণ করেছেন। এই মধ্যে হলুদ রঙের টিউলিপ ফুটেছে।

তিনি বলেন, ‘আমার এক ভাতিজা তাসিকুল আলম তপু পঞ্চগড়ে ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করে। সে পঞ্চগড়ে টিউলিপ চাষ করতে দেখে আমাকে উৎসাহিত করে। তার মাধ্যমে যোগাযোগ করে সেখান থেকে প্রতিটি চারা ১০০ টাকা দরে ৫০০ চারা ক্রয় করি। সেগুলো পরীক্ষামূলকভাবে  চাষ শুরু করেছি। শীত মৌসুম দীর্ঘায়িত না হওয়ায় টিউলিপ ফোটাতে তেমন একটা কষ্ট হয়নি। চারা রোপণের ১৩ দিন পরেই হলুদ রঙের টিউলিপ ফুল ফুটেছে।’

হাসিনুর জানান, আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাকি সব গাছে টিউলিপ ফুটবে। আসছে বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসে টিউলিপ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। এলাকাবাসীও আছেন তার বাগানের সব ফূল ফোটার অপেক্ষায়।

টিউলিপ ফুল চাষের জমি প্রস্তুত প্রণালীর বিষয় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ইউটিউব থেকে টিউলিপ ফুল চাষের পদ্ধতি সংগ্রহ করেছি। ওই পদ্ধতি অনুসরণ করে আমি প্রথমে জমি প্রস্তুত করি।  সমতল জমির চেয়ে একটু উচুঁ জমি টিউলিপ ফুল চাষের জন্য উপযোগী। প্রথমে জমি চাষ করে ওই জমিতে পানি সেচ দিয়ে গোবর সার এবং রাসায়নিক ইউরিয়া  ও ডিওপি সার দিয়ে জমির মাটি উর্বর করে নিতে হয়। এরপর প্রস্তুত করা জমিতে টিউলিপ ফুলের চারাগুলো রোপন করা হয়।

হাসিনুর বলেন, সপ্তাহে দু'দিন  সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। সাবধানতার সাথে আমি নিজে এবং দু'জন নির্ধারিত শ্রমিক নিয়ে এখন পর্যন্ত টিউলিপ বাগানের নিয়োমিত পরিচর্যা করে আসছি। উৎসুক লোকজন টিউলিপ ফুলের বাগান দেখতে আসলেও বাগানের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। বাগানের চারদিকে বেড়া দেওয়া রয়েছে। টিউলিপ বাগান খুব সাবধানতার সাথে আমি নিজেই পরিচর্যা করছি।  এছাড়াও  তিনি টিউলিপ চাষের জন্য বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়েছেন বলে জানান।  

তিনি আরো জানান, ৫'শত চারা কিনতে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এর পাশাপাশি বাঁশ, বেড়া, পলিথিন ও আনুষঙ্গিক খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। এখন দু'জন শ্রমিক কাজ করছেন।

হাসিনুর বলেন, ‘এবার পুরোপুরি সফল হতে পারলে আগামীতে এখানে ৫ একর জমিতে টিউলিপ চাষ করবো। এর মধ্যে আমার টিউলিপ বাগান দেখতে মানুষ ভিড় করছেন। তবে পরিচর্যা ও নিরাপত্তার জন্য এখনো কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, টিউলিপের প্রায় ১৫০টি জাত রয়েছে। যার মধ্যে বর্তমানে ৫ প্রজাতির চাষ হচ্ছে এখানে। আমি নিজেই সার্বিক ভাবে এটি তদারকি করছি। ভবিষ্যতে টিউলিপের চাষ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে।

বাগানে গিয়ে দেখা যায়, হাসিনুর রহমানের দুই শতক জমির বাগানে সারি সারি টিউলিপ গাছ। গাছে গাছে ফুটেছে হলুদ রঙের টিউলিপ। ওপরে পলিথিন ও ছোট ছিদ্রযুক্ত নেট দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে সূর্যের আলো। নিচে মাটিতে সানরাইজ, অ্যান্টার্কটিকা হোয়াইট (সাদা), লা বেলা রেড (লাল), স্ট্রং গোল্ডসহ (ইয়েলো) অ্যাড রেম (অরেঞ্জ) এবং মিল্কশেক (লাইট পিংক) প্রজাতির টিউলিপ।  এখন শুধু ফুল ফোটার অপেক্ষা।  

বোচাগঞ্জ উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুব রহমান বলেন, ‘টিউলিপ চাষের বিষয়ে জানতে পেরে আমরা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তরুণ উদ্যোক্তা হাসিনুর রহমান চৌধুরীকে কিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি দক্ষতার সাথেই টিউলিপ ফুলের চাষ শুরু করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন কুমার শাহা বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে টিউলিপ ফুলের চাষ করছেন জেনে আমরা আনন্দিত। এর মধ্যে টিউলিপ ফুল ফুটতে শুরু করেছে। আমি সম্প্রতি ওই টিউলিপ ফুলের বাগান পরিদর্শন করেছি। উদ্যোক্তা হাসিনুর রহমান ইউটিউব থেকে টিউলিপ ফুল চাষের পদ্ধতি সংগ্রহ করে ওই পদ্ধতি অনুযায়ী টিউলিপ চাষ করছেন। এর সাথে আমরাও তাকে কিছু পরামর্শ দিয়েছি। সেগুলো তিনি তার বাগানে কাজে লাগিয়েছেন। ফলে তিনি এখন টিউলিপ ফুল চাষে সফল।
পথরেখা/এআর

 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।