আফগানিস্তান : ২৮৪/১০
ইংল্যান্ড : ২১৫/১০
ফল : আফগানিস্তান ৬৯ রানে জয়ী
আরিফ সোহেল : বিশ্বকাপে বড় অঘটন ঘটে গিয়েছে ১৫ অক্টোবর। ম্যাচে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। প্রথমে আফগান ব্যাটারদের দাপুটে ব্যাটিংয়ের পর ইংরেজ ব্যাটারদের বিরুদ্ধে আফগান বোলারদের রাজত্ব করেছে। ২৮৪ রান করে আফগানিস্তান। ইংল্যান্ড শেষ ২১৫ রানে। হারের ব্যবধান ৬৯ রান।
বলা যায় স্পিনেই ধরাশায়ী গতবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। স্পিনাররা একেবারে পাত্তাই দেননি প্রেতিপক্ষের বাঘা বাঘা ব্যাটারদের। মুজিব-রশিদ মিলে একবারে নাকাল করেছেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনবারের দেখায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয়ের দেখা পেল আফগানরা। ২০১৫ সাল থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চে টানা ১৪ ম্যাচ হারের পর অবশেষে জয়ের স্বাদ পেলো আফগানিস্তান। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটা তাদের দ্বিতীয় জয়। এর আগে ২০১৫ সালে স্কটল্যান্ডকে ১ উইকেটে হারিয়েছিল আফগানরা।
টস জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ইংরেজ অধিনায়ক জস বাটলার। লক্ষ্য ছিল দ্রুত উইকেট তুলে আফগানিস্তানকে কম রানে আটকে দেওয়া। কিন্তু দুই আফগান ওপেনার মিলেই তুলে নিলেন ১১৪ রান। ইব্রাহিম জাদরান যখন আউট হলেন, তত ক্ষণে বড় রানের গন্ধ পেতে শুরু করে দিয়েছে আফগানিস্তান। কিন্তু পর পর উইকেট হারিয়ে সেই আশা ধাক্কা খায়। বিনা উইকেটে ১১৪ থেকে হঠাৎ আফগানিস্তানের স্কোর হয়ে যায় ১৫২ রানে ৪ উইকেট।
আফগানিস্তানের বড় রান তোলার ভিতটা গড়েছিলেন রহমানুল্লা গুরবাজ। ৮০ রান করেন তিনি। কিন্তু রান হয়ে যাওয়ায় শতরান হাতছাড়া হয় তাঁর। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলা ওপেনার ৫৭ বলে ৮০ রান করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। মিডল অর্ডারে রান করেন ইকরাম আলিখিল। তিনি ৬৬ বলে ৫৮ রান করেন। শেষ বেলায় রান করেন মুজিব উর রহমান। তিনি ১৬ বলে ২৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে দলকে পৌঁছে দেন ২৮৪ রানের লড়াকু স্কোরে।
ইংল্যান্ডের বোলারেরা খেই হারিয়ে ফেলেন। নতুন বলে শুরু করা ক্রিস ওকসকে মাত্র ৪ ওভার বল করান বাটলার। সেই ৪ ওভারে ৪১ রান দিয়ে দেন ওকস। ৪ ওভারে ৪৬ রান দেন স্যাম কারেন। দলের অন্যতম প্রধান দুই বোলার রান দেওয়ায় বাটলারকে ভরসা করতে হয় লিয়াম লিভিংস্টোন, জো রুটের মতো অনিয়মিত বোলারের উপর। তাঁরা দুজনেই একটি করে উইকেট নেন। দলের সব থেকে সফল বোলার আদিল রশিদ। তিনি ৩ উইকেট নেন। মার্ক উড ৯ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। একটি উইকেট নেন রিচি টপলে।
২৮৪ রানের লক্ষ্য মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড শুরুতেই হারায় জনি বেয়ারস্টোকে। ৪ বলে ২ রান করে আউট হন তিনি। বেশি ক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি জো রুটও। আফগান স্পিনার মুজিবের বল হঠাৎ নিচু হয়ে যায়। বুঝতেই পারেননি ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক। বোল্ড হয়ে যান রুট। ওপেনার দাউইদ মালান ৩২ রান করে আউট হয়ে যান। এর পরেই ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ভেঙে পড়ে। জস বাটলার (৯), লিয়াম লিভিংস্টোন (১০) এবং স্যাম কারেন (১০) তেমন রান করতে পারেননি।
লড়াই করছিলেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু তাঁকে কেউ সঙ্গ দিতে পারলেন না। রবিবার আফগানিস্তানের স্পিনারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাল বল করেন পেসারেরা। ফজলহক ফারুকি এবং নবীন উল হক ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে রান করতে সমস্যা হচ্ছিল রুটদের। সঠিক লাইন, লেংথের সঙ্গে স্লোয়ারের ফাঁদে ফেললেন ব্যাটারদের। প্রশংসা করতে হবে মুজিবের। ২২ বছরের তরুণ স্পিনারের বল বুঝতেই পারছিলেন না ইংরেজ ব্যাটারেরা। ১০ ওভারে ৫১ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নিলেন মুজিব। আর রশিদ ৩৭ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। ২ উইকেট শিকার করেন নবি।
পথরেখা/আসো