পথরেখা অনলাইন : ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে অঘটনের শিকার হয়েছে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা; দুই দলই। আফগানিস্তানের কাছে ইংল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অঘটনের দুঃস্মৃতিকে সাথে নিয়ে ২১ অক্টোবর নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দল তারা। তবে অঘটনের দুঃস্মৃতি ভুলে জয়ের ধারায় ফেরাই অভিন্ন টার্গেট। মুম্বাইয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মাঠে নামবে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা।
নিউজিল্যান্ডের কাছে ৯ উইকেটে হার দিয়ে এবারের শুরু করেছিলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। পরের ম্যাচে বাংলাদেশকে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম জয়ের দেখা পায় ইংলিশরা। কিন্তু নিজেদের পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৬৯ রানে পরাজিত হয়ে বড় ধাক্কা খায় জশ বাটলারের দল। নয়া দিল্লিতে প্রথমে ব্যাট করে ২৮৪ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ৮০ ও ইকরাম আলিখিল ৫৮ রান করেন। ম্যাচে আফগানিস্তানের তিন স্পিনার মুজিব উর রহমান, রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবী মিলে ৮ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে ২১৫ রানে অলআউট করে দেয়। মুজিব ও রশিদ ৩টি করে এবং নবি ২টি উইকেট নেন।
অঘটনের খাতায় ইংল্যান্ডের নাম উঠার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এবারের বিশ^কাপে আটসেটের শিকার হয় দক্ষিণ আফ্রিকাও। বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা দল নেদারল্যান্ডসের কাছে ৩৮ রানে হেরে যায় প্রোটিয়ারা। অথচ শুরুটা দারুণ ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার। শ্রীলংকার বিপক্ষে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪২৮ রান করে ১০২ রানের জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ১৩৪ রানে বিশাল ব্যবধানে হারায় প্রোটিয়ারা।
প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর নেদারল্যান্ডসের কাছে হারে হতাশ দক্ষিণ আফ্রিকা। হারের হতাশাকে ভুলে গিয়ে জয়ের ধারায় ফিরতে চায় প্রোটিয়ারা। দলের অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচে যেভাবে শুরু করেছি, সেটি ধরে রাখতে পারিনি আমরা। নেদারল্যান্ডসের কাছে হার অবশ্যই হতাশার। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। কিন্তু ঐ ম্যাচ নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে এবং জয় পেতে হবে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে হলে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে হবে। ইংলিশরা শুরু থেকেই আমাদের আক্রমন করবে, আমাদের পাল্টা আক্রমনে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে হবে। জয়ের ধারায় ফিরতেই মাঠে নামবে ছেলেরা।’
বাভুমার মতো জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না ইংল্যান্ডও। আসরে দ্বিতীয় জয় পেতে নিজেদের সেরাটা উজার করে মরিয়া ইংলিশরা, এমনটাই জানালেন দলের অধিনায়ক জশ বাটলার। তিনি বলেন, ‘আগের ম্যাচের হার আমাদের জন্য পীড়াদায়ক। কিন্তু ঐ হার আমাদের সতর্ক করেছে। আমরা ঘুড়ে দাঁড়াতে মরিয়া হয়ে আছি। ইতোমধ্যে দুই ম্যাচ হেরে বেশ পিছিয়ে পড়েছি আমরা। শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না দল।’
ইনজুরির কারনে এখনও ইংল্যান্ডের জার্সিতে মাঠে নামতে পারেননি অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন স্টোকস। তিনি বলেন, ‘আমি এখন ভালো অবস্থায় আছি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে তর সইছে না। আশা করছি, ইংল্যান্ডের চতুর্থ ম্যাচে মাঠে নামতে পারবো।’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে ইংল্যান্ড ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন পেসার জোফরা আর্চার। তার খেলার কোন সম্ভাবনা নেই। কিন্তু রিচ টপলির হাঁটুর ইনজুরিতে আর্চারকে দলের সাথে রাখার সিদ্বান্ত নেয় ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট। বিশ্বকাপের আগে সাতবার মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা। এরমধ্যে ইংল্যান্ডের জয় ৪টিতে, দক্ষিণ আফ্রিকার ৩টিতে। গতবারের বিশ^কাপে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ১০৪ রানে জয় পেয়েছিলো ইংলিশরা।
বিশ^কাপ পরিসংখ্যানে পিছিয়ে থাকলেও এখন অবধি ওয়ানডেতে জয়ের পাল্লা ভারী দক্ষিণ আফ্রিকার দিকেই। ইংলিশদের বিপক্ষে ৬৯বারের মোকাবেলায় ৩৩টিতে জয় আছে দক্ষিণ আফ্রিকার। ৩০টিতে জিতেছে ইংল্যান্ড। ১টি ম্যাচ টাই ও ৫টি পরিত্যক্ত হয়। এ বছরের জানুয়ারিতে সর্বশেষ দেখায় ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
পথরেখা/আসো